রমজানে সুস্থ থাকতে করণীয়

0
300
রমজানে সুস্থ থাকতে করণীয়

পবিত্র মাহে রমজান চলছে। সুস্থ প্রাপ্ত বয়স্ক সকল মুসলমানের জন্য এ মাস অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। সেহরি, ইফতার, নামায ও পবিত্রতার মধ্য দিয়ে পার হয় রোজার মাস। এবার গরমের মধ্যেই শুরু হচ্ছে রোজা।

এই সময়ে রোজা রাখা একটু কষ্টকর। তার পরও অনেকেই আছেন যারা নিজেদের অসুস্থতা সত্ত্বেও পবিত্র এই মাসে রোজা পালন করেন। রোজা রাখার জন্য এ মাসে মানুষের খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রায় লক্ষণীয় পরিবর্তন আসে। সেই নিয়মের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার জন্য কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়।

সেহরিতে কী খাবেন :
সেহরি দিয়ে দিনের শুরু হয়। সেহরির খাদ্য তালিকায় প্রোটিন সমৃদ্ধ, আঁশযুক্ত, সুষম, দ্রুত হজম হয়ে যায় এমন খাবার থাকা চাই। সেই সঙ্গে অবশ্যই যথেষ্ট পরিমাণে পানি খাওয়া উচিত।

গম থেকে তৈরি খাবার, রুটি, শাকসবজি, ফল, বাদাম ইত্যাদি। সেহরির খাদ্য তালিকায় যেন সব ধরনের পুষ্টিমান সমৃদ্ধ খাবার থাকে। যেমন ফলমূল, শাকসবজি, কম চর্বিযুক্ত মাংস বা মাছ, ভাত বা রুটি, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, ডিম ইত্যাদি।

এছাড়া প্রোটিন জাতীয় খাবার পানির তৃষ্ণা বাড়ায়। সারা দিন খাওয়া হবে না ভেবে অনেকে সেহরিতে ভূরিভোজ করেন। তাদের খাবারের তালিকায় থাকে মাছ মাংসসহ হরেক পদের প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। কিন্তু মাছ-মাংস অর্থাৎ প্রোটিন জাতীয় খাবার পানির তৃষ্ণা বাড়ায়, যা রোজাদারের কষ্ট বাড়িয়ে দেয়। তাই এই গরমে সারা দিন তৃষ্ণাহীন ঝরঝরে অনুভূতি পেতে সেহরিতে ভাতের সঙ্গে শুধু সবজি (ভাজি বা ঝোল করে) খান।

ইফতারে কী খাবেন :
ইফতারকে ঘিরে বাঙালি মুসলমানদের আয়োজনের যেন শেষ নেই। পরিবার, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবকে নিয়ে প্রতিদিন রোজা শেষে ইফতারে বসেন সবাই। ইফতারে সাধারণত পুষ্টিগুণের চেয়ে মুখের স্বাদকেই বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়। তবে যাই খান না কেন  টেবিলে যেন পুষ্টিগুণসম্পন্ন ইফতার থাকা জরুরি।

একটি আদর্শ ইফতারের খাদ্য তালিকায় প্রথমেই রাখা হয় খেজুর। সারা দিনের দুর্বলতা দূর করতে ও শরীরকে সুস্থ সবল রাখতে খেজুরের জুড়ি নেই। রোজা খুলে এক রাশ খাবারের মধ্যে প্রথমেই যেদিকে চোখ যায় তা হচ্ছে পানি। এ ক্ষেত্রে কিছু খেজুর খেয়ে পরিমাণমতো পানি পান করে নিন।

আরও পড়ুনঃ   সর্বরোগের মহৌষধ কালোজিরা-কালিজিরার অবিশ্বাস্য যত গুণ

পিয়াজু, বেগুনি, চপ এসব ভাজাপোড়া দিয়ে ইফতার না করে টাটকা সবজিতে ভরা এক বাটি উষ্ণ স্যুপ খেয়ে নিন। স্যুপ একদিকে যেমন পানির অভাব পূরণ করে, অন্যদিকে পাকস্থলীকে সুস্থ রাখে।

খেজুর, পানি, স্যুপ ও সালাদ দিয়ে শুরু করুন আপনার প্রতিদিনের ইফতার। এরপর আপনি আপনার পছন্দমতো খাবার খেতে পারেন।

রমজানে যেসব অভ্যাস এড়িয়ে চলবেন :

ইফতারে হঠাৎ করে প্রচুর খাবেন না। চা, কফি ও সোডাজাতীয় খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন। এগুলোর পরিবর্তে প্রচুর পানি পান করুন।

অতিরিক্ত মশলাজাতীয় খাবার খাবেন না। এগুলো বুক জ্বালা ও বদ হজমের কারণ হয়ে উঠতে পারে। সেহরিতে অতিরিক্ত মশলাজাতীয় খাবার খেলে বেশি পিপাসা পায়।

সেহরিতে অতিরিক্ত লবণজাতীয় খাবার যেমন আচার, সল্টেড বিস্কিট ইত্যাদি খাওয়া উচিত নয়। অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।

সারা দিন তৃষ্ণামুক্ত থাকতে সেহরি ও ইফতারে চা-কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। যাদের চা খাওয়ার অভ্যাস আছে তারা একটি সুষম ইফতার গ্রহণের ২ ঘণ্টা পরে ১ কাপ চা খেতে পারেন। ইফতারের পর পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

যাদের মাথাব্যথা ও ঝিম ঝিম করে, তারা ইফতারের শুরুতে ৪-৫টি খেজুর খেয়ে পানি পান করুন।

রমজান মাস ধূমপান বর্জনের একটি সুবর্ণ সুযোগ। রোজা শুরু হওয়ার ১০-১৫ দিন আগে থেকেই একটু একটু করে ধূমপান কমিয়ে দিন। পুরো রমজান মাস নিজেকে ধূমপানমুক্ত রাখতে চেষ্টা করুন।

তবে রোজায় আপনি যতই অসুস্থ থাকুন বা যত রকম জটিলতাই থাকুক না কেন, আপনার খাদ্য ও জীবনযাত্রায় সামান্য কিছু পরিবর্তন এনে সেগুলো মোকাবেলা করা সম্ভব।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

19 − 15 =