প্রেগনেন্সি একজন নারীর জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এ সময় প্রয়োজন বাড়তি যত্ন এবং সাবধানতা। এই সময়ের সামান্য অজ্ঞতা সন্তান এবং মা, উভয়ের জন্যই হতে পারে মারাত্নক ঝুঁকির কারণ।
জেনে নেয়া যাক এমন কিছু জরুরী বিষয়।
স্বাভাবিক শারীরিক অবস্থায় যে ঔষধ আমরা গ্রহণ করি, প্রেগনেন্সি পিরিয়ডে সেই একই ওষুধ গর্ভস্থ শিশুর জন্য হুমকি স্বরুপ হতে পারে। এজন্য প্রায় প্রতিটি ড্রাগের প্রেগনেন্সি ক্যাটাগরী আছে। অনেকে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই পেপটিক আলসারের বিভিন্ন ওষুধ কিনে খেতে শুরু করেন। অথচ ওমেপ্রাজল বা ডমপেরিডনের মত বহুল প্রচলিত ওষুধগুলোও গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষতির কারণ হতে পারে। উপরোক্ত দুইটি ড্রাগ ই প্রেগনেন্সি ক্যাটাগরী C এর অর্ন্তভুক্ত। সুতরাং এই সময়ে রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া যে কোনো ধরনের ওষুধ গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন।
প্রেগনেন্সি পিরিয়ডের প্রথম থেকেই ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন। পাশাপাশি ফলিক এসিড supplementation গ্রহণ করুন। পর্যাপ্ত ফলিক এসিডের অভাবে গর্ভস্থ শিশুর ব্রেইন এবং স্পাইনাল কর্ডের ডিফেক্ট হতে পারে।
Pregnantপ্রথম ২৮ সপ্তাহ পর্যন্ত মাসে কমপক্ষে ১ বার, ৩৬ সপ্তাহ পর্যন্ত ২ সপ্তাহ পরপর চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। এরপর থেকে প্রতিসপ্তাহে অন্তত একবার ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। তবে যদি আপনার ডায়বেটিস, হাইপারটেনশন বা অন্য কোনো শারীরিক জটিলতা থেকে থাকে তবে আপনার antenatal visit এর সংখ্যা বেশি হতে পারে। আপনার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা সাপেক্ষে আপনার ডাক্তার আপনার visit এর সংখ্যা নির্ধারণ করবেন।
যদি এমন কোনো ওষুধ থাকে যা আপনি নিয়মিত ভাবে দীর্ঘদিন খেয়ে আসছেন,তাহলে এ বিষয়ে আপনার চিকিৎসককে অবহিত করুন।
অতিরিক্ত মানসিক চাপ , ধূমপান ও এলকোহল সেবন থেকে বিরত থাকুন। পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন।
প্রেগনেন্সি পিরিয়ডে এক্স-রে শিশুর birth defect কারণ হতে পারে। যদি কোনো ইমার্জেন্সি কারণে X-Ray করতে বলা হয়, সেক্ষেত্রে আপনার ডাক্তারকে প্রেগনেন্সির ব্যাপারে জানান।
পূর্বে কোনো এবরশন বা MR / D&C করিয়ে থাকলে ডাক্তারকে জানান। এর আগে কোনো মৃত শিশু জন্ম দিলে বা জন্মের পর কোনো শিশুর মৃত্যু ঘটলে সেই বিষয়টি ও অবগত করুন।
শিশুর নড়া চড়া বন্ধ হয়ে গেলে কিংবা কমে গেলে, ২৪ ঘন্টা অপেক্ষার ঝুঁকি নেবেন না। দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।
১৮ থেকে ২২ সপ্তাহের মধ্যে একটি আল্ট্রাসনোগ্রাম করাতে পারেন, যেটাকে anomaly scan বলে। এর মাধ্যমে শিশুর বেশিরভাগ জন্মগত ত্রুটি নির্ণয় করা সম্ভব।
লিখেছেন: ডাঃ মোশাররাত জাহান কণা