বার্ধক্য সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

0
389
বার্ধক্য,aging

কেবল বয়স বাড়ার মানেই কি বৃদ্ধ হয়ে যাওয়া? তাই যদি না হয় তাহলে কখন আমরা ধরে নেব যে আমরা বৃদ্ধ হয়ে গেছি? একেক জন কি একেক বয়সে বৃদ্ধ হয়? আমাদের কি বৃদ্ধ হতেই হবে? এমন অসংখ্য প্রশ্নের ভারে মধ্যবয়সী কারো মন উদাসী হয়ে উঠাটা অস্বাভাবিক নয়। তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি যে আমরা কেন বৃদ্ধ হই তার সঠিক উত্তরটা এখনো আমাদের জানা হয়ে উঠেনি।

বয়স বাড়ার সাথে সাথে যখন এই শরীরটির নানা প্রতিকুলতার সাথে লড়াই করার সক্ষমতা লোপ পায় এবং বার্ধক্যজনিত রোগগুলো শরীরে বাসা বাধতে শুরু করে তখনই ধরে নিতে হবে আমরা বার্ধক্যে পৌছে গেছি। তাই বার্ধক্যে পৌছুবার বয়স জনে জনে ভিন্ন হতেই পারে।

প্রতিটি মানব কোষে অজস্র (নির্দিষ্ট সংখ্যক) ডি,এন,এ (DNA)রয়েছে,আর তারই একটা ছোট্ট অংশকে বলা হয় জিন (Gene)।এই জিন গুলোই আমাদের বংশগতির ধারক ও বাহক। আর এই জিন জনিত কারণকেই এখনো বৃদ্ধ হবার প্রধান কারণ হিসেবে তাত্বিক ভাবে ধরে নেয়া হয়।

আমরা প্রতিনিয়ত যে খাদ্য গ্রহন করি তার বিপাক এবং শ্বষনের মাধ্যমেই আমরা বেচে থাকার শক্তি অর্জন করি।

আর এই পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে তৈরি হয় প্রচুর বিষাক্ত উপাদান, যাদের বলা হয় রিএকটিভ অক্সিজেন স্পিশিস (Reactive oxygen species) যার সংক্ষিপ্ত ভিন্ন একটি নাম ‘ফ্রি র‌্যাডিকেল’ (Free radical)। তবে আনন্দের বিষয় এইযে আমাদের শরীরে এন্টি অক্সিডেন্ট (antioxidant) নামক এমন কিছু উপাদান আছে যা সহজেই এইসব ফ্রি র‌্যাডিকেল কে নিষ্ক্রিয় করে দেয়। আর যখন এদের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায় এবং ফ্রি র‌্যাডিকেল প্রাধান্য বিস্তার করে তখন এরা আমাদের বিভিন্ন জিন তথা ডিএনএ কে ধবংশ অথবা ক্ষতিগ্রস্ত করে তোলে। আরো মজার একটি ব্যপার হলো আমাদের শরীরে এমন কিছু জিন আছে যারা সেই ক্ষতিগ্রস্ত ডিএনএ গুলোকে সারিয়ে তুলতে পারে। ফ্রি র‌্যাডিকেল যখন সেইসব সারিয়ে তোলার মত জিনকেও ধবংস বা ক্ষতিগ্রস্ত করে তখন কিন্ত সত্যি সত্যিই আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গগুলো ব্যাপকভাবে তাদের কর্মক্ষমতা হারাতে শুরু করে। মস্তিস্ক,হৃদপিন্ড,ফুসফুস,বৃক্ক,অগ্নাশয়,পেশী,ত্বক সহ সকল অঙ্গগুলো এমনি ভাবে প্রতিকুলতার সাথে লড়াই করার শক্তি হারিয়ে ফেলে এবং সহজেই বার্ধক্য জনিত রোগে আক্রান্ত হতে শুরু করে। এভাবেই একটি মানুষ একসময় বার্ধক্যে উপনিত হয়।

আরও পড়ুনঃ   বয়সন্ধিকালীন স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও কিশোর-কিশোরীদের সুষম খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা

এতকিছু জেনে মনে তো প্রশ্ন জাগতেই পারে,কোনো ভাবেই কি বার্ধক্যকে ঠেকিয়ে রাখা যায়না? কি জানি কোনদিন হয়তো এমন কিছু আবিস্কৃত হয়েও যেতে পারে। সে উত্তরটাও না হয় সময় এর উপরই বাধা থাক। তবে পরিমিত স্বাস্থ্যকর আহার গ্রহন এবং সুশৃংখল জীবন যাপন পদ্ধতি কিন্ত আমাদের শরীরে সেই বিষাক্ত ফ্রী র‌্যাডিকেল উৎপাদনের হার ব্যাপক অংশে কমিয়ে দেয়। কি জানি হয়ত এই যাদুর কাঠির পরশেই একদিন বার্ধক্যকে জয় করা যেতে পারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

ten − 9 =