পালং শাকের গুণ তথা পালং শাকের অসাধারণ উপকারিতা জেনে নিন

0
1076
পালং শাকের উপকারিতা
পালং শাকের অসাধারণ উপকারিতা

 পালং শাক যেমন খেতে ভালো, তেমনি কাজেও দারুণ। পালং শাক খাওয়ার রয়েছে অনেক উপকারিতা। এটি অনেকেরই খুব পছন্দের। সুলভে পাওয়া সুস্বাদু এই শাকের রয়েছে নানা ধরণের কঠিন রোগ সারানোর কার্যকরী গুণ। আর শাক-সবজির মধ্যে পালং শাককে বলা হয় শাকের রাজা।তাই খাদ্য তালিকায় অবশ্যই রাখুন পালং শাক। এটি এমন একটি সবজি যার রয়েছে অনেক ধরনের উপকারিতা এবং এটি নিয়মিতভাবে খেলে কখনোই আফসোস করবেন না।

এটি ভাজি কিংবা রান্না করে খাওয়া যায়। নানারকম অসুখ-বিসুখ থেকে দূরে থাকতে খাবারের তালিকায় রাখতে পারেন এই সবুজ শাকটি। পালং শাকে রয়েছে প্রয়োজনীয় ভিটামিন এ ও কে, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, খাদ্য আঁশ, আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, জিংক, ফলিক এসিড ও সেলেনিয়াম। এছাড়া এতে আছে প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট। এই সমস্ত পুষ্টি উপাদানগুলো শরীরের স্বাভাবিক কাজকর্ম এর জন্য অপরিহার্য। তাই খাদ্য তালিকায় অবশ্যই রাখুন পালং শাক।

প্রতি ১০০ গ্রাম পালং শাকে আছে ২৩ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি, কার্বোহাইট্রেড ৩.৬ গ্রাম, আঁশ ৪.২ গ্রাম, চিনি ০.৪ গ্রাম, প্রোটিন ২.২ গ্রাম, ভিটামিন ‘এ’ ৪৬৯ মাইক্রোগ্রাম-৯৪০০১৪ ইউনিট, বিটাকেরোটিন, ৫৬২৬ মাইক্রোগ্রাম লিউটিন, ফোলেট (বি৯) ১৯৬ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন সি ২৮ মি. গ্রাম, ভিটামিন কে ৪৬৩ মাইক্রোগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৯৯ মি. গ্রাম, আয়রন ২.৭ মি. গ্রাম।

চলুন, জেনে নিই পালং শাকের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে।

  • পালং শাক জন্ডিসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য এই শাক বিশেষ উপকারী। পোড়াঘায়ে, ক্ষতস্থানে, ব্রণে বা কোথাও ব্যথায় কালচে হয়ে গেলে টাটকা পালং পাতার রসের প্রলেপ লাগালে উপকার পাওয়া যায়। পালং শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি, সি, ই এবং আয়রন। এজন্য পালং শাক খেলে রক্তে আয়রনের মাত্রা বেড়ে যায়।
  • পালং শাকে আছে নিওজেন্থিন উপাদান যা প্রদাহ নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যাদের হাড়ের জোড়ায় ব্যাথা আছে তারা নিয়মিত খাদ্য তালিকায় পালং শাক রাখলে উপকার পাবেন।
  • পালং শাকে বিটা কেরোটিন এবং প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ থাকায় তা কোলনের কোষগুলোকে রক্ষা করে।
  • পালং শাক স্মৃতিশক্তি বিকাশে এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে খুবই কার্যকর।
  • পালং শাকে রয়েছে ১৩ প্রকার ফাভোনয়েডস আছে যা ভয়ানক সব রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং
    যা ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে পালং শাক খুবই কার্যকর।
  • দেহ ঠাণ্ডা ও স্নিগ্ধ রাখে পালং শাক।পালং শাকে থাকা পুষ্টি উপাদান শরীরের ক্লান্তিভাব দূর করে শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি করে।
  • পালং শাকে থাকা উচ্চ মাত্রার ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
  • সাধারণত সবুজ শাক সবজিতে লুটেনসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফাইটোকেমিক্যাল থাকে যা দৃষ্টি শক্তি বাড়িয়ে দেয়। পালং শাকে থাকা উচ্চ মাত্রার বিটা ক্যারোটিন চোখের ছানি পড়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
  • পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেলস থাকায় এটি মহিলাদের মাসিকজনিত সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে।
  • পালং শাক দাঁত ও হাড়ের ক্ষয়রোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য পালং শাক খুব উপকারী।
  • এতে থাকা ভিটামিন এ দেহকে বিভিন্ন সংক্রমণ ও রোগ থেকে রক্ষা করে।
  • ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য পালং শাক খুব উপকারী।
  • পালং শাকে বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সমস্যা যেমন ব্রণ, বলিরেখা পড়া ইত্যাদির দূরীকরণেও বেশ কার্যকর। এছাড়া এটা ত্বকের বয়সের ছাপ পড়ার গতিকে ধীর করে এবং ত্বককে নরম ও স্থিতিস্থাপক অবস্থা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
  • পালং শাক রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে এবং দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। পালং শাক পেট পরিষ্কার রাখতেও যাদুর ন্যায় কাজ করে।
  • এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও সাহায্য করে।
  • বাতের ব্যথা, মাইগ্রেশন, অস্টিওপোরোসিস, মাথাব্যথা দূর করতে প্রদাহনাশক হিসেবে পালং শাক কাজ করে।
  • বাতের ব্যথা, অস্টিওপোরোসিস, মাথাব্যথা দূর করতে ও প্রদাহনাশক হিসেবে পালং শাক কাজ করে।
  • পালং শাক কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। অনেকের মেদবৃদ্ধি ও দুর্বলতায় হাঁফ ধরে, তারা পালং পাতার রস খেলে উপকার পাবেন।
  • পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ ও ‘আয়রন’ থাকায় রক্তস্বল্পতা দূর করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
  • ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য পালং শাক খুব উপকারী। দাঁত ও হাড়ের ক্ষয়রোধে পালং শাক কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
  • পালং শাকে থাকা পুষ্টি উপাদান শরীরের ক্লান্তিভাব দূর করে শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি করে।
  • এই সবজিতে থাকা ফলিক এসিড সুস্থ কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হৃদযন্ত্রের সুস্থতা ধরে রাখতে পালং শাকের ওপর নির্ভরতা রাখতে পারেন।
  • কিডনিতে পাথর থাকলে, তা গুড়ো করতে সাহায্য করে পালং শাক।
  • এতে থাকা বেশি মাত্রার ভিটামিন এ, লিম্ফোসাইট বা রক্তের শ্বেত কণিকার প্রয়োজনীয় মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতাকেও শক্তিশালী করে। বিভিন্ন সংক্রমণ রোগ থেকে রক্ষা করতেও অতুলনীয়।
  • অনেকের মেদবৃদ্ধি ও দুর্বলতায় হাঁফ ধরে, তারা পালং পাতার রস খেলে উপকার পাবেন।
  • পালং শাকে থাকা ভিটামিন এ ত্বকের বাইরের স্তরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটা বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সমস্যা যেমন ব্রণ, বলিরেখা পড়া ইত্যাদির দূরীকরণেও বেশ কার্যকর। এছাড়া এটা ত্বকের বয়সের ছাপ পড়ার গতিকে ধীর করে এবং ত্বককে নরম ও স্থিতিস্থাপক অবস্থা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
  • পালং শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন যা শারীরিকভাবে সুস্থ রাখার পাশাপাশি চুল, নখ ও ত্বকও ভালো রাখে।
  • পালং শাকে রয়েছে এমন কিছু উপাদান যা ব্রেনের সুস্থতায় কাজ করে। পালং শাকে থাকা ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম ও বেটা ক্যারোটিন হৃদযন্ত্রকে রোগমুক্ত রাখে। পালং শাকে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান লিভার সুস্থ রাখে।
আরও পড়ুনঃ   কিডনি পরিষ্কার, যৌনশক্তি বৃদ্ধি ও মাথাব্যথা নিরাময়সহ ধনেপাতার যত গুণ, জেনে রাখলে কাজে দেবে

এছাড়া এতে রয়েছে লিম্ফোবিক এসিড যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন ভিটামিন সি ও ই কে পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে। এটা রক্তের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং দিনের বেলার ক্লান্তিভাব দূর করে।

এক কাপ পালং শাক খাদ্য আঁশের দৈনিক চাহিদার ২০% পূরণ করার সাথে সাথে ভিটামিন এ ও কে-এর দৈনিক চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। এতে উচ্চ মাত্রার প্রোটিন, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, জিংক, ফলিক এসিড ও সেলেনিয়াম রয়েছে। এই সমস্ত পুষ্টি উপাদানগুলো শরীরের স্বাভাবিক কাজকর্ম এর জন্য অপরিহার্য।

পালং শাক শরীরের অন্ত্র সচল রাখতে সাহায্য করে। অন্ত্রের ভেতরে জমে থাকা মল সহজে বের করে দেয়। ডায়াবেটিস রোগীরা এই শাক পরিমাণমতো খেলে উপকার পান। এই শাকের বীজও খুব উপকারী। এর বীজের ঘন তেল কৃমি ও মূত্রের রোগ সারায়। পালং শাকের কঁচি পাতা ফুসফুস, কণ্ঠনালীর সমস্যা, শরীর জ্বালাপোড়া ইত্যাদি সমস্যা দূর করতেও ভালো কাজ দেয়। পালং শাক শরীর ঠান্ডা রাখে।

জণ্ডিসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য পালং শাক বিশেষ উপকারী। এই শাককে বলা হয় রক্ত পরিষ্কারক খাদ্য। রক্ত বৃদ্ধিও করে। চোখের জ্যোতি বাড়ায় এবং মুখের লাবণ্য বৃদ্ধি করে। পোড়া ঘায়ে, ক্ষতস্থানে, ব্রনে বা কোথাও কালশিরা পড়লে টাটকা পালং পাতার রসের প্রলেপ লাগালে ভালোই উপকার পাওয়া যায়।

কলমি শাকের গুণ তথা কলমি শাকের অবিশ্বাস্য উপকারিতা জেনে নিন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

thirteen − 12 =