শরীর সুস্থ না থাকলে চারপাশের কোনো কিছুই ভালো লাগে না। আমাদের শরীরে যে রক্ত প্রবাহিত হয়। এ রক্তচাপও বিভিন্ন সময়ে চাপ সৃষ্টি করে। এরন প্রভাব শরীরের ওপর মারাত্মক ভাবে পড়ে। এর দুটি ধারা- উচ্চরক্তচাপ এবং নিম্ন রক্তচাপ। সব সময় উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে সতর্ক করা হয়। তবে নিম্ন রক্তচাপও কম ক্ষতিকর নয়।
‘হাইপোটেনশন’ বা নিম্ন রক্তচাপ হল এমন একটি শারীরিক সমস্যা, যেখানে ধমনীতে রক্তের চাপ স্বাভাবিকের তুলনায় কমে যায়। আর এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য রয়েছে প্রাকৃতিক উপাদান।
মানসিক দুশ্চিন্তা, গর্ভাবস্থা, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, খাদ্যাভ্যাসের সমস্যা, পানিশূন্যতা, রক্তক্ষরণ, অপুষ্টি, সোডিয়ামের অভাব, অ্যালার্জি ইত্যাদি কারণে রক্তচাপ কমতে পারে।
প্রায়ই মাথা ঝিমঝিম করা, মাথায় খালি অনুভূতি, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া ইত্যাদি নিম্ন রক্তচাপের উপসর্গ। এই নিম্ন রক্তচাপ থেকে মস্তিষ্ক, বৃক্ক ও হৃদযন্ত্রের স্থায়ী সমস্যার সূত্রপাত হতে পারে, তাই উপসর্গগুলোকে অবহেলা করা উচিত নয়। চিকিৎসাবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে নিম্ন রক্তচাপ ভালো করতে প্রচলিত ও প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি উপায় দেয়া হল।
লবণ পানি :
রক্তচাপ বাড়ানোর একটি অপরিহার্য উপকরণ সোডিয়াম, যা লবণে থাকে। তাই নিম্ন রক্তচাপ হলে লবণ পানি পান করা উপকারী। তবে মনে রাখতে হবে, অতিরিক্ত সোডিয়াম পাকস্থলিতে আলসার, বৃক্কে পাথর এবং শরীর ফোলার কারণ হতে পারে। দেড় চা-চামচ লবণ মেশানো এক গ্লাস পরিমাণ পানি সপ্তাহে একদিন পান করতে পারেন। এছাড়াও সোডিয়াম আছে এমন কোমল পানীয়ও পান করা যেতে পারে।
দুধ ও কাঠবাদাম :
দুটোই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং তা স্বাভাবিক অবস্থায় রাখতে সাহায্য করে। পানিতে পাঁচ থেকে ছয়টি কাঠবাদাম সারারাত ডুবিয়ে রেখে সকালে এর খোসা তুলে পিষে পেস্ট করে নিতে হবে। দুধে এই পেস্ট মিশিয়ে ফুটিয়ে নিয়ে প্রতিদিন সকালে একগ্লাস করে পান করতে হবে।
তুলসি পাতা :
পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম আর ভিটামিন সি প্রচুর পরিমাণে থাকে তুলসি পাতায়। এসব উপাদান রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। ‘ইউজিনল’ নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্টেও ভরপুর থাকে তুলসি পাতা, যা শুধু রক্তচাপ নয়, কোলেস্টেরলের মাত্রাও দমিয়ে রাখে।
কিশমিশ:
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন আর ভোজ্য আঁশে ভরপুর একটি খাবার, যা রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে আদর্শ। বিশুদ্ধ পানিতে একমুঠ কিশমিশ সারারাত ডুবিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খেতে পারেন। কিশমিশ ডোবানো পানি পান করলেও উপকার মিলবে।
বিটরুট :
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই সবজি অত্যন্ত উপকারী। কাঁচা অবস্থায় চিবিয়ে খেতে পারেন, সালাদে কয়েক টুকরা কেটে মিশিয়ে দিতে পারেন কিংবা অন্যান্য ফল-সবজির সঙ্গে মিলিয়ে স্মুদি বানিয়েও খেতে পারেন। সকালে দুই গ্লাস বিটরুটের সরবত খাওয়ার অভ্যাস গড়তে পারলে নিম্ন রক্তচাপের উপসর্গগুলো দূরে থাকবে।
পানি পান :
পানি শূন্যতা নিম্ন রক্তচাপের একটি বড় কারণ। তাই দিনে দুতিন লিটার পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। সঙ্গে ডাবের পানি, ঘরে তৈরি লেবুর শরবত, ঘোল ইত্যাদিও পান করতে পারেন। এতে শরীরে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ‘ইলেক্ট্রোলাইট’য়ের সরবরাহ বাড়বে।