নারীদের অনিয়মিত পিরিয়ডকে নিয়মিত করার দারুণ কিছু সহজ উপায় জেনে নিন

0
1265
অনিয়মিত পিরিয়ড

অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা যে কোন বয়সের নারীদের মাঝেই দেখা যেতে পারে। বিশেষ করে যারা অবিবাহিত, তাঁদের মাঝে বেশি দেখা যায় এই সমস্যা। সাধারনত অনেক বেশি স্ট্রেস, পরিশ্রম, দুর্বলতা, জীবনযাত্রায় বড় কোনও পরিবর্তন এসব কারণে অনিয়মিত পিরিয়ড হতে পারে। অনিয়মিত পিরিয়ডের কারণে সন্তান ধারণে সমস্যা সহ হতে পারে আরও নানান রকমের শারীরিক সমস্যা। কিন্তু কী করবেন? জেনে নিন অনিয়মিত পিরিয়ডকে নিয়মিত করা ২টি দারুণ ঘরোয়া চিকিৎসা। দুটোর মাঝে যে কোন একটি পালন করুন মাত্র ১ মাস। পিরিয়ডের সমস্যা চিরকালের জন্য দূরীভূত হবে। আর এই চিকিৎসায় ব্যবহার করা হবে আদা, দারুচিনি, দুধের মত সাধারণ ও সহজলভ্য সব উপাদান।

বিঃদ্রঃ নিচে আরও ১০টি এক্সট্রা ঘরোয়া সমাধান দেওয়া আছে।

আদার ব্যবহার

বহু গুণের এই আদা কেবল সর্দি কাশি সারাতেই কাজে লাগে না, পিরিয়ডকে নিয়মিত করতেও এর জুড়ি নেই। কীভাবে ব্যবহার করবেন এই আদা?

  • – ১ কাপ পানি নিন। এতে ১ চা চামচ মহি আদা কুচি ৫ থেকে ৭ মিনিট ফুটিয়ে নিন।
  • – সামান্য চিনি বা মধু যোগ করুন।
  • – এই পানীয়টি পান করুন দিনে ৩ বার, খাবার খাওয়ার পর।
  • – ১ মাস নিয়মিত পান করুন, পিরিয়ড নিয়মিত হয়ে যাবে নিশ্চিত।

বা আদা অনিয়মিত পিরিয়ড ঠিক করার পাশাপাশি পিরিয়ড চলাকালীন পেটের ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে। আধা চাচামচ আদা কুঁচি এক কাপ পানিতে ফুটিয়ে নিন ৬ থেকে ৭ মিনিট। তারপরে এতে মেশান সামান্য চিনি বা মধু। এরপরে মিশ্রণটি ছেঁকে নিন। দিনে তিনবার খাওয়ার পরে এই মিশ্রণটি এক মাস খেতে হবে।

দারুচিনিতে হবে জাদু

পিরিয়ডকে নিয়মিত করতে দারুচিনি আরেকটি দারুণ কার্যকরী উপাদান। এই দারুচিনি ব্যবহার করে পিরিয়ড জনিত ব্যথা হতেও মুক্তি পেতে পারবেন আপনি। কীভাবে ব্যবহার করবেন?

  • -আধা চামচ দারুচিনি গুঁড়ো যোগ করুন এক গ্লাস দুধে। সাথে দিতে পারেন মধু। এই মিশ্রণ পান করুন ৪ থেকে ৫ সপ্তাহ। পিরিয়ড নিয়ে সমস্যা কেটে যাবে।
  • -পান করতে পারেন দারুচিনি চা, দৈনিক এক টুকরো দারুচিনি চিবালেও কাজে দেবে। তবে খেয়াল রাখবেন, দারুচিনি যেন হয় খাঁটি।
আরও পড়ুনঃ   কেন নারীর ওজন বাড়ে!

বা দারুচিনি অনিয়মিত পিরিয়ডের পাশাপাশি পিরিয়ড চলাকালীন পেটের ব্যথাও কমাতে সাহায্য করে। আধা চা চামচ দারুচিনি গুঁড়া দুধের সাথে মিলিয়ে খেতে পারেন। অথবা নিয়মিত চায়ের সাথে দারচিনি দিতে পারেন।

তথ্যসূত্র- টপ টেন হোম রেমিডি

নিচে রইল অনিয়মিত পিরিয়ডের ১০টি এক্সট্রা ঘরোয়া সমাধান-

(১) হলুদ
হালকা গরম দুধের সাথে মেশান ১/৪ চাচামচ হলুদ গুঁড়ো। হালকা গরম থাকতেই খেয়ে নিন। প্রতিদিন খেলে অবশ্যই পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন।

(২) ধনে
দুকাপ পানিতে এক চা চামচ আস্ত ধনে দিয়ে অল্প আঁচে পানিটা ফুটিয়ে নিতে থাকুন, যতক্ষণ না সেটা অর্ধেক হচ্ছে। পিরিয়ডের ডেট আসার আগের সপ্তাহ থেকে দিনে তিনবার এই পানি খান।

(৩) তুলসি পাতা
এক চামচ তুলসি পাতার রস আর এক চামচ মধু মিশিয়ে নিন, সাথে সামান্য গোলমরিচের গুঁড়ো মিশিয়ে দিনে দু’বার খেতে পারেন।

(৪) তিল ও গুড়
এক মুঠো তিল টেলে নিয়ে এক চামচ গুড় এর সাথে মিশিয়ে বাটতে হবে। এই মিশ্রণ প্রতিদিন খালি পেটে খেতে হবে।

(৫) গাঁজরের রস

গাঁজর আয়রনের একটি ভালো উৎস, যা শরীরের হরমোন ফাংশনকে সঠিকভাবে চলতে সাহায্য করে। অনিয়মিত পিরিয়ড এর ক্ষেত্রে এক গ্লাস গাঁজরের রস প্রতিদিন খেতে হবে তিনমাস পর্যন্ত ।

(৬) মৌরি

দুই টেবিল চামচ মৌরি এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে সারারাত। পরদিন সকালে পানিটা ছেঁকে নিয়ে খেতে হবে। কার্যকর ফলাফল পেতে এক মাস নিয়মিত খেতে হবে মৌরি ভেজানো এই পানি।

(৭) কুঁচি ধনেপাতা (Parsley)
ধনেপাতার রস পিরিয়ড সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে খুব উপকারী। ধনেপাতার রস খেতে না পারলে, ধনেপাতা বাটা খেতে পারেন ভাতের সাথে।

(৮) করলার রস
পিরিয়ডের সমস্যা সমাধানে করলার রস ও বেশ কার্যকরী। দিনে একবার বা সম্ভব হলে দুবার করলার রস খানে টানা কয়েক সপ্তাহ। এছাড়াও করলার রস ডায়াবেটিস এর ক্ষেত্রেও বেশ উপকারী।

আরও পড়ুনঃ   নারীদের ঋতু চলাকালে ঋতুতে বিলম্ব হওয়ার কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

(৯) ভিটামিন সি
অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যায় ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খুব জরুরি। পিরিয়ডের আগের সপ্তাহ থেকে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি যুক্ত খাবার রাখুন ডায়েটে।

(১০) পুদিনা পাতা
একচামচ মধুর সাথে পুদিনা পাতার রস মিশিয়ে দিনে তিনবার খেতে হবে একটানা কয়েক সপ্তাহ।
এগুলোর পাশাপাশি যে সব বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিত তা হল –
শরীরের ওজন ঠিক রাখা, নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করা,স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং  ধূমপান বা অন্য কোন এলকহলিক পানীয় না খাওয়া ইত্যাদি।

উল্লেখ্য উপরে যেসব সমাধানের কথা বলা হয়েছে, সেগুলো নিতান্তই ঘরোয়া সমাধান। বড় কোন শারীরিক সমস্যা না থাকলে আশা করা যায় ১-৩ মাসের মধ্যে ফলাফল পাবেন । কিন্তু অন্য কোন শারীরিক সমস্যার কারণে দীর্ঘসময় ধরে যদি আপনার অনিয়মিত ভাবে পিরিয়ড হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি ।
ভাল ও সুস্থ থাকুন

আরও পড়ুনঃ

পিরিয়ডের ব্যথায় সহজ ঘরোয়া সমাধান

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

19 − seven =