জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কঠোর অবস্থান

0
132
স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা এমন একটি সংবেদনশীল বিষয় যে, এই ক্ষেত্রে ডাক্তার কিংবা ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের ন্যূনতম ভুলও মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলিয়া দিতে পারে। অসুস্থ হইয়া আরোগ্য লাভের আশায় যখন কেহ চিকিত্সকের দ্বারস্থ হন, তখন তিনি সর্বতোভাবেই চিকিত্সকের ব্যবস্থাপত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রদত্ত ঔষধের নিকট নিজেকে সমর্পণ করেন। বিশ্বাসের পরিণতি যখন করুণ মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে— নিশ্চিতভাবেই তাহা নিন্দনীয় এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অন্যভাবে ত্রাতারূপী এই ঔষধ যখন শিশুদের জন্যও প্রাণঘাতীরূপে আবির্ভূত হয়, তখন তাহা নিশ্চিতভাবেই প্রথাগত সেই অপরাধের গ্লানিকে অতিক্রম করিয়া মানব সভ্যতায়ও কলঙ্কের তিলক আঁকিয়া দেয়— জাতির বিবেককে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
সকলেই জানেন যে, একটি ফার্মাসিউটিক্যালসের নিম্নমানের ও ভেজাল প্যারাসিটামল সেবন করিয়া ২০০৯ সালে সারাদেশে ২৮ শিশুর মৃত্যু হয়। গুরুতর অসুস্থ হইয়া পড়ে আরও অনেক শিশু। এই প্রেক্ষাপটে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর বাদী হইয়া আদালতে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তার অযোগ্যতা এবং অদক্ষতাহেতু ঢাকার ঔষধ আদালত কর্তৃক সকল আসামিই খালাস পাইয়া যায়। ন্যায়বিচার হইতে বঞ্চিত হয় নিহত শিশুদের শোকাহত পরিবার। বিষয়টি নজরে আসিবার পর এই ব্যাপারে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়াছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। পাশাপাশি ঔষধ প্রশাসনের কোনো ব্যক্তি দায়ী বা দোষী সাব্যস্ত হইলে তাহার বিরুদ্ধেও যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতিও দিয়াছেন তিনি। বস্তুত দেশে এমন কিছু আইন আছে, যাহা অনেক ক্ষেত্রেই বাস্তবায়নযোগ্য নহে। প্রচলিত এইসকল আইনকে পুঁজি করিয়া শুধু স্বাস্থ্যখাতেই নয়, প্রতিটি ক্ষেত্রেই একটি স্বার্থান্বেষী মহল ফায়দা গ্রহণ করিয়া থাকেন।
লাইসেন্সবিহীনভাবে ঔষধ উত্পাদন করিয়া বাজারজাত করা সুস্পষ্টভাবে আইনের লঙ্ঘন। সেইখানে ঔষধ প্রশাসনের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা কি তাহাদের উদাসীনতা বা গাফিলতির পরিচায়ক নয়? প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক ড. এম আর খান এবং অধ্যাপক ড. মোয়াজ্জেম হোসেন একই কোম্পানির ঔষধে ক্ষতিকারক ডাই-ইথাইলিন গ্লাইকল শনাক্ত করিতে পারিলেও ঔষধ প্রশাসন নাকি সংগৃহীত নমুনায় কোনো বিষাক্ত উপাদানই খুঁজিয়া পান নাই। কেন পান নাই তাহা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাই ভালো বলিতে পারিবেন। অন্যদিকে তদন্তে অনিয়ম, নিয়মবহির্ভূতভাবে নমুনা সংগ্রহ করিয়া আদালতে জমা প্রদানের মতো ঘটনাগুলি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হইতে পারে না। ঔষধ প্রশাসনের দায়িত্ব হইল ঔষধের মান নিয়ন্ত্রণ করা—আইন বা নিয়মনীতির লঙ্ঘন করা নহে। এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে—আইনের রক্ষকরাই যদি তাহা রক্ষায় ব্যর্থতার পরিচয় দেন—তাহা হইলে কেন এই আইন?

বিঃ দ্রঃ গুরুত্বপূর্ণ হেলথ নিউজ ,টিপস ,তথ্য এবং মজার মজার রেসিপি নিয়মিত আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে লাইক দিন আমাদের ফ্যান পেজ বিডি হেলথ নিউজ এ ।

আরও পড়ুনঃ   নিজের জিন পরীক্ষার আগে জেনে নিন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

18 − two =