বলিরেখা মানেই ত্বকে বয়সের ছাপ। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমতে থাকে আমাদের ত্বকের টানটান ভাব। মুখের চামড়া কুচকে যাওয়া, ভাঁজ পড়া, চোখের নিচে ভাঁজ পড়া, নির্জীব ত্বক এগুলোই বয়স বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ। এর থেকে মুক্তি পেতে হলে নিচের পরামর্শগুলো মেনে চলুন।
ঘরোয়া পদ্ধতির পাশাপাশি ব্যবহার করতে হবে অ্যান্টি-এজিং ক্রিম। বেশিরভাগ মানুষের ধারণা অ্যান্টি-এজিং ক্রিম ৩০ এর পরে ব্যবহার করতে হয়। কারণ এর আগে তো আর বয়সের ছাপ আসে না। কিন্তু একথা একেবারেই ঠিক নয়। এজিং ২০ বছর বয়সেও দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে মেয়েদের।
বলিরেখা দূর করতে ঘরোয়া পদ্ধতি
- ডিমের কুসুমটি বাদ দিয়ে সাদা অংশটি খুব ভালো করে ফেটিয়ে নিয়ে আপনার ত্বকে ম্যাসাজ করতে পারেন। তারপর ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে দিন যেন তা শুকিয়ে যায়। এরপর মুখ ধুয়ে ফেলুন। ডিমের সাদা অংশে যে ভিটামিন ‘বি’ এবং ভিটামিন ‘ই’ আছে তা আপনার ত্বকের যৌবন ফেরাতে সাহায্য করবে।
- পাকা কলাও ত্বকের বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে। অফিস থেকে ফিরে, বাড়ির নানা কাজের ফাঁকে, রান্না করতে করতে কিংবা টিভি দেখতে দেখতেও লাগিয়ে নিতে পারেন এই প্যাক। এর জন্য একটি পাকা কলাই যথেষ্ট। কলা পেস্ট করে ২০ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখুন। তারপর ঠাণ্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে নিন।
বলিরেখা দূর করতে প্রতিদিনের ত্বকের যত্ন
- ক্লিনজিং করুন। প্রতিদিন বাইরে থেকে ফিরে ভালোভাবে ক্লিনজার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে হবে।
- ফেসওয়াশ ব্যবহার করুন। ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। মুখে ফেসওয়াশ লাগানোর সময় আপনার চোখের পাশের জায়গাগুলো বাদ দিন। এরপর ভালোভাবে মুখে কয়েকবার ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
- টোনার ব্যাবহার করুন। টোনার আপনার মুখের ময়লা এবং তেল গোড়া থেকে তুলে দিতে সাহায্য করবে যা সাবান অথবা ফেসওয়াশ সব সময় পারে না। একটু তুলার বল নিয়ে এতে টোনার ভিজিয়ে মুখে হালকা করে ঘষে ঘষে ময়লা তুলে নিন। বিশেষ করে কপাল এবং নাকের আশেপাশের জায়গাগুলোকে বাদ দেবেন না। কারণ ওইসব জায়গায় তেল এবং ময়লা বেশী জমে থাকে। ত্বক শুষ্ক হলে টোনার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। শুষ্ক ত্বকে প্রতি দিন তিনবার ক্রিম লাগানো উচিত। আর যাঁদের ত্বক তৈলাক্ত তারা অ্যাসট্রিনজেন্ট দিয়ে মুখ পরিষ্কার করবেন। এরপর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।
- প্রতিদিন অবশ্যই ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করুন। সকালে এবং রাতে মুখ ধোয়ার পরে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। আপনার মুখে ভাঁজ পড়া থেকে ত্বককে রক্ষা করবে।
- সপ্তাহে একদিন আপনার ত্বকে স্ক্রাব ব্যবহার করুন। স্ক্রাব ব্যবহারের সময় ত্বককে জোরে ঘষবেন না। স্ক্রাবারের জন্য দুই চামচ মধুর সঙ্গে এক চামচ চিনি মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে ব্যবহার করুন। স্ক্রাব মুখে দিয়ে ৭ থেকে ১০ মিনিট মুখে ভালোভাবে ম্যাসাজ করে কুসুম কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে নিন।
- বাইরে বের হওয়ার আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। আপনার ত্বককে অবশ্যই সুর্যের ইউভি রশ্মি থেকে রক্ষা করুন। ত্বক রোদে পুড়লে খুব সহজে মুখে বলিরেখা পড়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই বাইরে যাওয়ার আগে মুখে এবং গলার এস পি এফ যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। সানক্রিম বয়সের ছাপকে তো দূর করবেই পাশাপাশি ত্বককে সুর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করবে।
রাতে ঘুমানোর আগে ত্বকের যত্ন
- ঘুমানোর আগে অবশ্যই মেকআপ তুলে নিতে ভুলবেন না। আর ক্লেনজার দিয়ে ত্বক পরিষ্কার নিন। পরে ফেস ওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। মুখে-গলায় অ্যান্টি-রিঙ্কেল ক্রিম ব্যবহার করুন। ময়েশ্চারাইজার সমৃদ্ধ নাইট ক্রিম সারাদিনের ক্ষতিগ্রস্ত চামড়া মেরামত করে সেলগুলিকে আবার উজ্বল করে দেয়।
- চোখে সবার আগে ভাঁজ বা বলিরেখা পড়ে। তাই প্রতিদিন রাতে আই জেল বা ক্রিম ব্যবহার করতে ভুলবেন না।
- সারাদিনের ব্যস্ততার পর রাতে এবং ছুটির দিনগুলোতে একটু সময় বের করে ত্বকের যত্ন নিন।