আরও পড়ুন সৌদি খেজুর চাষ করবেন যেভাবে
ডা. আলমগীর মতি:
ইসলাম ধর্মে খেজুরকে অন্যান্য সব ফল থেকে আলাদা মূল্যায়ন করা হয়েছে। পবিত্র কোরআন শরিফে ২৬ বার খেজুরের কথা বলা হয়েছে। সূরা মরিয়মে এর উপকারিতা বর্ণনা করা হয়েছে। বিবি মরিয়ম (রা.) যখন প্রসব বেদনায় কষ্ট পাচ্ছিলেন তখন তিনি একটি খেজুর গাছের নিচে বসেছিলেন, তিনি গাছকে নড়তে বলেছিলেন এবং গাছ নড়ার ফলে যে খেজুর নিচে পড়েছিল তা তিনি খেয়েছিলেন প্রসব বেদনার উপশমের জন্য। নবীজীর (সা.) প্রিয় ফল ছিল খেজুর এবং প্রতিদিন সকালে তিনি সাতটি খেজুর দিয়ে নাশতা করতেন। নবীজী মোহাম্মদ (সা.) রমজানের রোজার সময় সব মুসলমানকে খেজুর ও পানি দিয়ে ইফতার করতে বলতেন। একদা তিনি বলেছিলেন, যদি কারও বাড়িতে অল্প কিছু খেজুর থাকে, তাহলে তাকে গরিব বলা যাবে না। পবিত্র কোরআন শরিফ প্রথম লেখা হয়েছিল খেজুর গাছের পাতায়।
অর্থ : ‘আমি জমিনে উৎপন্ন করেছি শস্য-দ্রাক্ষী, শাক-সবজি, জয়তুন ও খেজুর বৃক্ষ। ‘ সূরা-আবাসা, আয়াত : ২৭।
‘খেজুর ও আঙ্গুর ফল থেকে তোমরা সাকার ও উত্তম খাদ্য তৈরি কর। নিঃসন্দেহে বুদ্ধিমান লোকদের জন্য এতে নিদর্শন রয়েছে। ‘ সূরা- নাহাল, আয়াত : ৬৭, এ ছাড়া সূরা আনআমের নিরানব্বই নম্বর এবং সূরা মরিয়মের তেইশ নম্বর আয়াতেও খেজুরের উপকারিতা বর্ণনা করা হয়েছে।
খেজুরের কার্যকারিতা : হৃদরোগ : হজরত সায়ীদ (রা.) বর্ণনা করেন, একদা আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে রসুলে পাক (সা.) আমাকে দেখতে তাশরিফ নিয়ে এলেন। রসুলে পাক (সা.) পবিত্র হাতের শীতলতা আমার অন্তর পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল। অতঃপর রসুলে আকরাম (সা.) এরশাদ ফরমালেন- ‘তুমি অন্তরে কষ্ট অনুভব করছ। তুমি হারেস ইবনে কালদাহ সাকি্বফীর কাছে যাও। কারণ সে একজন চিকিৎসক। সে যেন মদিনার সাতটি আজওয়া খেজুর নিয়ে বীজসহ পিশে তোমার মুখে ঢেলে দেয়। ‘ -আবু দাউদ, মিশকাত।
বিষক্রিয়া বন্ধে : আজওয়া খেজুর বিষের কার্যক্ষমতা কমাতে বিশেষভাবে কার্যকর। এই সম্পর্কে রসুল (সা.) এরশাদ ফরমাইছেন, ‘আজওয়া জান্নাতের ফল। এর মধ্যে বিষের নিরাময় রয়েছে। ‘ তিরমিজি, মিশকাতুল মাসাবিহ। ‘হজরত সা’আদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রা.) বর্ণনা করেন, রসুল পাক (সা.) এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালে সাতটি আজওয়া খেজুর খাবে, সে দিন বিষ এবং জাদু তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। ‘ বুখারি শরিফ।
শক্তি বর্ধনে : খেজুর শারীরিক ও মানসিক শক্তিবর্ধক। খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য উপাদান যা শারীরিক ও মানসিক শক্তি বৃদ্ধিসহ হজম শক্তি, যৌনশক্তি ও রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করে। এ সম্পর্কে মা আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, ‘রসুলে পাক (সা.) হাসিস পছন্দ করতেন। ‘ হাসিস তিনটি উপাদানযোগে প্রস্তুত যা হচ্ছে (১) খেজুর (২) মাখন (৩) জমাট দই। এটা শারীরিক, মানসিক শক্তি ও যৌনশক্তি বর্ধক। খেজুর ফুলের পরাগরেণু বন্ধ্যত্ব দূর করে, শুক্রাণু বৃদ্ধি করে। খেজুর ও খেজুরের ফুল পরাগরেণু ডিএনএর গুণগতমান বৃদ্ধি করে এবং অণ্ডকোষের শক্তি বাড়ায়।
পাতলা পায়খানা বন্ধে : খেজুরে বিদ্যমান পটাশিয়াম, সোডিয়াম, জিংক ও অন্যান্য খনিজ লবণ পাতলা পায়খানায় উপকারী। এটা খাদ্যশক্তি শারীরিক দুর্বলতা দূর করে। এ ছাড়াও খেজুরের বীজ পাতলা পায়খানা বন্ধে কার্যকর।