করোনারি হৃদরোগের নীরব লক্ষণ

0
264
করোনারি হৃদরোগ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর ৭০০,০০০ এরও বেশি মানুষ হার্ট অ্যাটাকে ভুগেন এবং প্রায় ৪০০,০০০ মানুষ করোনারি হার্ট ডিজিজ বা করোনারি হৃদরোগে মারা যায়।

ডা. জোয়েল কে কান বলেন, জীবনমান পরিবর্তন ও মেডিক্যাল থেরাপির মাধ্যমে হার্ট অ্যাটাকের সূত্রপাত বিলম্বিত বা প্রত্যাখ্যান করা যায়, প্রায় ৮০ শতাংশ হৃদরোগ জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য।

জোয়েল কে কানের মতে, যে লক্ষণগুলো ক্লগড আর্টারি বা বদ্ধ ধমনী এবং হৃদরোগ নির্দেশ করতে পারে তা হল-

মাথার চুল ঝরে টাক হয়ে যাওয়া
প্রায় ৩৭,০০০ পুরুষের ওপর পরিচালিত নতুন এক গবেষণায় জানা যায়, যেকোনো বয়সে মাথার তালুতে অতিমাত্রায় টাক নীরব করোনারি হার্ট ডিজিজের প্রবল পূর্বাভাস দিয়েছে। ৭,০০০ মানুষের (৪,০০০ নারী ছিল) ওপর অন্য একটি গবেষণা চালিয়ে পাওয়া যায়, মাঝারি থেকে অতিমাত্রার টাক উভয়লিঙ্গের ক্ষেত্রে হৃদরোগঘটিত মৃত্যুর ঝুঁকি দ্বিগুণ বৃদ্ধি করেছে।

কানের লতিতে ভাঁজ
শরীরের একটি অস্বাভাবিক চিহ্ন হল ইয়ার ক্রিজ বা কানের লতিতে ভাঁজ। ইয়ার ক্রিজ বা কানের লতির ভাঁজকে (বিশেষ করে কোণবিশিষ্ট ভাঁজ যা কানের ক্যানেল থেকে কানের লতির নিম্ন প্রান্তের মধ্যে কোণাকোণিভাবে থাকে) কয়েক দশক আগে মেডিক্যাল গবেষণার প্রতিবেদনে করোনারি হার্ট ডিজিজের নীরব লক্ষণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। হার্টের ধমনীতে রক্ত সংবহন বাধাপ্রাপ্ত হলে ইয়ার ক্রিজ হতে পারে। যদিও কিছু মেডিক্যাল বিশেষজ্ঞ বিবেচনা করেন যে, ইয়ার ক্রিজ বয়স্কতা বা বার্ধ্যক্যতার সাধারণ লক্ষণ। গবেষকরা গতবছর করোনারি হার্ট ডিজিজের নীরব লক্ষণ পরিমাপ করতে সর্বাধুনিক সিটি স্ক্যান মেথড ব্যবহার করেন। এতে তারা আবিষ্কার করেন যে, ইয়ার ক্রিজ হৃদরোগের পূর্বাভাস দিয়েছে, এমনকি অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় (যেমন- বার্ধক্য এবং ধূমপান) দায়ী থাকা সত্ত্বেও।

হাঁটার সময় পায়ের কাফে ব্যথা
কাফ পেইন বা পায়ের গুলের ব্যথাকে ক্লডিকেশনও (নিম্নপায়ে মাংসপেশীতে অপর্যাপ্ত রক্তপ্রবাহের কারণে ব্যথা) বলে। করোনারি হার্ট ডিজিজ নির্ণীত হওয়ার পূর্বে অ্যাথেরোসক্লেরোসিস পায়ের ধমনীতে ব্লক বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষ করে ধূমপায়ীদের মধ্যে। এরকম উপসর্গ দেখা দিলে বিলম্ব না করে একে মূল্যায়ন করা প্রয়োজন হবে। আপনার ডাক্তার পায়ের পালস বা স্পন্দন পরীক্ষা করে দেখবেন এবং পায়ের রক্তচাপ ও রক্তপ্রবাহের সাধারণ পরিমাপ করে রক্ত সংবহনে বাধা আছে কিনা নিশ্চিত হবেন। যত দ্রুত সম্ভব হৃদরোগ নির্ণয় করা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ প্রয়োজনীয় খাদ্যাভ্যাস মেনে চলে ও মেডিক্যাল সেবা গ্রহণ করে এ সমস্যাকে প্রতিরোধ করা যেতে পারে। জোয়েল কে কান বলেন, ‘আমি আমার রোগীদেরকে বেশি করে উদ্ভিদভিত্তিক খাবার ও কম পরিমাণে প্রাণীজাত খাবার খেতে এবং হন্টন কার্যক্রম শুরু করতে বলেছিলাম। এতে তাদের কাফ পেইন কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে সেরে যায় এবং কয়েক বছর ধরে ব্যথা ফিরে আসেনি।’

আরও পড়ুনঃ   রক্ত দেয়ার আগে ও পরে যা মনে রাখা প্রয়োজন

করোনারি হার্ট ডিজিজের নীরব লক্ষণ কারো মধ্যে থাকলে তার রক্তচাপ, কোলেস্টেরল এবং ফাস্টিং গ্লুকোজ বা অনাহারজনিত গ্লুকোজের সংখ্যা সম্পর্কে জানা উচিত।

আপনি যদি ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম বা ইকেজি, করোনারি ক্যালসিয়াম কম্পিউটেড টমোগ্রাফি ইমেজিং অথবা এক্সারসাইজ স্ট্রেস টেস্টিংয়ের মাধ্যমে হৃদরোগ চিহ্নিত করতে চান, তাহলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।


 পি ডি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

seventeen + 5 =