রক্তে অভ্যন্তরীণ পার্শ্বচাপকে রক্তচাপ বলে। কমপক্ষে ১৪০/৯০ মিঃ মিঃ মারকারীর রক্তের এই অভ্যন্তরীণ চাপকে উচ্চ রক্ত চাপ বলে। চোখের সাথে উক্ত রক্ত চাপের সম্পর্ক আছে। রেটিনার পরীক্ষা ও এনজিওগ্রাফীর মাধ্যমে এ সম্পর্ক নিরূপণ করা সম্ভব। উচ্চ রক্ত চাপের ফলে চোখের রেটিনা, করয়েড ও অপটিক নার্ভ আক্রান্ত হয়। কখনও কখনও চক্ষু বিশেষজ্ঞগণ অফথ্যালমোসকোপের মাধ্যমে রেটিনা পরীক্ষা করে রোগীর উচ্চ রক্তচাপ সনাক্ত করতে পারে।
উচ্চ রক্তচাপজনিত রেটিনার রোগ : রেটিনার ছোট ধমনীসমূহ সংকোচিত হয়। উচ্চ রক্তচাপের ফলে রেটিনাতে আরও কিছু লক্ষণ পরিস্ফুটিত হয় যেমন- ল রেটিনার রক্ত জমাট বাধা। ল শাখা ধমনী ও শাখা শিরা বন্ধ হয়ে যাওয়া। ল রেটিনার রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাওয়া। ল নতুন ধমনী ও শিরা তৈরি হওয়া। ল ভিট্রিয়াসে রক্ত জমাট বাধা। ল রেটিনা ছিঁড়ে যাওয়া।
উচ্চ রক্তচাপের কারণে ডায়াবেটিসজনিত রেটিনার রোগ আরও বেশি হয়।
উচ্চ রক্তচাপজনিত করয়েডের রোগ : কম বয়স্ক রোগীদের মধ্যে যারা হঠাৎ করে উচ্চ রক্ত চাপে আক্রান্ত হয়, তাদের মধ্যে বিশেষ করে একলামসিয়া আক্রান্ত মহিলাগণ করয়ডের রোগে ভুগে থাকেন।
উচ্চ রক্তচাপ জনিত অপটিক নার্ভের রোগ : রক্তচাপ অধিক ও দীর্ঘ স্থায়িত্ব হলে অপটিক নার্ভ-এ আক্রান্ত হয়। এর ফলে অপটিক ডিক্সের চারদিকে শিখা সদৃশ্য রক্ত জমে থাকে। ডিক্স মারজিন বিকৃত হয় রেটিনার ছোট শিরাসমূহ মোটা হয় এবং রক্ত জমে মেকুলাতে প্রদাহজনিত। সাদা পদার্থ জমা হয়।
উচ্চ চাপজনিত চোখের রেটিনার রোগসমূহ যাতে না হয়, সেজন্য যথাসময়ে উচ্চ রক্ত চাপের চিকিৎসা করানো উচিত। রক্ত চাপ স্বাভাবিক রাখা ও ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত থাকতে পারলে চোখের রেটিনার রোগসমূহ ও চোখের সাথে সম্পৃক্ত অন্যান্য রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ
অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
শাহবাগ, ঢাকা।