আপনি কি গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় ভুগছেন? এই খাদ্য উপাদানগুলো নিমিষেই সারাবে অ্যাসিডিটির কষ্ট

0
417
গ্যাস্ট্রিক

আপনি কি অ্যাসিডিটির সমস্যায় প্রায়শ ভুগে থাকেন? প্রচন্ড অ্যাসিডিটির সমস্যা তৈরি হয় গ্যাস্ট্রিক গ্ল্যান্ড থেকে অতিরিক্ত অ্যাসিড নিঃসরণ এর ফলে। এমনটা হয়ে থাকে পেট খালি থাকার ফলে, খাদ্য গ্রহণের মাঝে লম্বা সময়ের বিরতি নিলে এবং ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় যেমন: চা, কফি প্রভৃতি বেশী গ্রহণ করলে। অ্যাসিডিটির ফলে বুকে জ্বালাপোড়া ভাব তৈরি হয়। এছাড়াও অ্যাসিডিটি দেখা দেবার হাজারো কারণ থাকতে পারে। অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাদ্য গ্রহণ, অনিয়মিত খাদ্য গ্রহণ, মানসিক চাপ, ধূমপান, ঘুমানোর আগে ফাস্ট ফুড খাওয়া ইত্যাদি অ্যাসিডিটি তৈরি করে। অ্যাসিডিটির সমস্যায় কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। পেট ভারি লাগা ও ফাঁপাভাব তৈরি হওয়া, হেঁচকি ওঠা, বুক জ্বালাপোড়া করা, ঢেঁকুর ওঠা ইত্যাদি। এই সকল সমস্যা শারীরিক অস্বস্তি তৈরি করে।

অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে অবশ্যই সঠিক খাদ্যাভাস গড়ে তোলা প্রয়োজন। তবে সঠিক খাদ্যাভাস গড়ে তোলা সম্ভব হয় সঠিক খাদ্য উপাদানের মাধ্যমেই। জেনে নিন কোন খাবারগুলো নিয়মিত গ্রহনে অ্যাসিডিটির কষ্টকর সমস্যা দূর হবে চিরতরে।

কলা

কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম এবং প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড। যা অ্যাসিডিটির বিরুদ্ধে খুব ভালো কাজ করে থাকে। ঘরোয়া উপায়ে অ্যাসিডিটি দূর করার জন্য সবচেয়ে সহজ ও উপকারী উপায় হলো কলা খাওয়া। অ্যাসিডিটির সমস্যাকে দূর করার জন্য প্রতিদিন একটি করে কলা খেতে পারেন।

তুলসী পাতা

তুলসী পাতা পাকস্থলীতে মিউকাস তৈরি করতে সাহায্য করে। তুলসী পাতার প্রাকৃতিক গুণাগুণ এবং ঠাণ্ডা করার বৈশিষ্ট্য গ্যাস্ট্রিক অ্যাসিডের সমস্যার ক্ষেত্রে আরাম প্রদান করে থাকে। অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দিলে তাৎক্ষনিক উপশমের জন্য ৫-৬ টি পরিস্কার তুলসী পাতা চিবিয়ে খেতে হবে। পুরোপুরি ভাবে অ্যাসিডিটির সমস্যা দূর করার জন্য ৩-৪ টি পাতা ফুটিয়ে সে পানির সাথে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে প্রতিদিন পান করতে হবে।

পুদিনা পাতা

আরও পড়ুনঃ   স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাবে ৬ খাবার

পুদিনা পাতা অ্যাসিড উপাদানের কার্যক্ষমতা ধীরগতির করে দেয় এবং খাদ্য পরিপাক হতে সাহায্য করে। তবে পুদিনা পাতা এক্ষেত্রে আপনাকে আরাম দিতে পারে। তা অ্যাসিডিটির ফলে তৈরি হওয়া ব্যথাভাব ও বুক জ্বালাপোড়া ভাব কমিয়ে আনতে কাজ করে। অ্যাসিডিটির সমস্যা কমাতে পুদিনা পাতাকে কুচি করে পানিতে ফুটিয়ে নিতে হবে। পানি ঠাণ্ডা হলে পাতা ছেঁকে নিয়ে পানিটা পান করতে হবে।

দারুচিনি

খাদ্য পরিপাকজনিত যেকোন সমস্যার ক্ষেত্রে এই প্রাকৃতিক উপাদানটি সবচেয়ে বেশী কার্যকরী। দারুচিনিতে রয়েছে প্রকৃতিক অ্যান্টাসিড। তা খাদ্য দ্রুত পরিপাক হতেও সাহায্য করে থাকে। দারুচিনি গ্রহণের জন্য উপযুক্ত উপায়টি হলো- আধা চা চামচ পরিমাণ দারুচিনি গুঁড়া এক কাপ পানিতে ফুটিয়ে নিতে হবে। ঠাণ্ডা করে এই দারুচিনি পানি দিনে তিনবার পান করতে হবে।

বাটারমিল্ক

টকদই, পানি ও গোলমরিচ গুঁড়া দিয়ে তৈরি করা নোনতা-টক স্বাদের এই পানীয় অনেকের দারুণ পছন্দের। বাটারমিল্কে থাকে ল্যাকটিক অ্যাসিড। যা তাৎক্ষনিকভাবে অ্যাসিডিটির ফলে তৈরি হওয়া জ্বালাপোড়া ভাব দূর করে। এই পানীয়তে থাকা ক্যালসিয়াম পাকস্থলীতে পুনরায় অ্যাসিড তৈরিতে বাধা প্রদান করে থাকে।

ডাবের পানি

ডাবের পানি পাকস্থলীতে মিউকাস তৈরিতে সাহায্য করে থাকে। যা পাকস্থলিকে অতিরিক্ত অ্যাসিড উৎপাদনের নেতিবাচক প্রভাবের হাত থেকে রক্ষা করে থাকে। ডাবের পানি পান করার ফলে শরীরের pH এর মাত্রা ক্ষারীয়তে রূপান্তরিত হয়ে থাকে।

ঠাণ্ডা দুধ

ঠাণ্ডা দুধ পাকস্থলীর গ্যাস্টিক অ্যাসিডের সমস্যাকে অনেকটা কমিয়ে ফেলে। দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। যা পাকস্থলীতে পুনরায় অ্যাসিড উৎপাদনে বাধা প্রদান করে থাকে। হুট করে বুক জ্বলাপোড়া সহ অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দিলে এক গ্লাস শীতল দুধ পান করে নিতে পারেন তাৎক্ষনিক উপশমের জন্য। তবে আপনার দুধ হজমের সমস্যা থাকলে (যেমন ল্যাক্টোজ ইনটলারেন্স বা আইবিএস) এই উপায়টি অ্যাসিডিটির অবস্থা আরো খারাপ করতে পারে।

এলাচ

আরও পড়ুনঃ   পানপাতার ৭টি আশ্চর্যজনক উপকারিতা!

প্রাকৃতিক উপাদান এলাচ পরিপাকক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে থাকে। এলাচ খাওয়ার ফলে পাকস্থলীর অ্যাসিডিক প্রভাব কমে যায়। একইসাথে পরবর্তি সময়ে অ্যাসিডিক প্রভাব তৈরি হওয়া থেকেও রক্ষা করে। অ্যাসিডিটির জন্য এলাচ গ্রহণ করতে হবে এই নিয়মে- দুইটি এলাচ ভালোভাবে ছেঁচে নিয়ে পানিতে ফুটিয়ে নিতে হবে। পানিটি ঠাণ্ডা করে সেটা পান করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ  আপনি কি গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটির সমস্যায় ভুগছেন ?

সূত্র: Boldsky  

-কে এন দেয়া

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

17 + 5 =