অস্থি ও অস্থিসন্ধি-সেকেন্ডারি টিউমার (Secondary Bone Tumor)
বড়দের হাড়ে সবচেয়ে বেশী যে ধরনের টিউমার হতে দেখা যায় তা হলো সেকেন্ডারি টিউমার। সেকেন্ডারি টিউমার প্রায় সবসময়ই ক্যান্সার জাতীয় একটি রোগ। একে সেকেন্ডারি বলা হয় এই কারনে যে এটা অস্থির নিজস্ব টিউমার নয়, শরীরের অন্য কোথাও ক্যান্সার হলে তা থেকে ছড়িয়ে এটা অস্থিতে আসে। যেখান থেকে এই টিউমারটি এসেছে তাকে বলা হয় প্রাইমারি টিউমার। স্তন, ফুসফুস, প্রস্টেট গ্রন্থি, কিডনি এবং থাইরয়েডে গ্রন্থিতে ক্যান্সার হলে তা সহজেই অস্থিতে ছড়িয়ে পড়ে, আর এই ছড়িয়ে পড়া ক্যান্সার এর বীজটি অস্থিতে যে টিউমার তৈরী করে তাকে সেকেন্ডারি বোন টিউমার (Secondary bone tumour) বা মেটাস্টাটিক টিউমার (Metastatic tumour) বলা হয়।
বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে হাত এবং পায়ের হাড়ের উপড়ের দিকে মেটাস্টাটিক টিউমার হতে দেখা যায়, এছাড়া কোমড়ের হাড় এবং মেরুদন্ডের হাড়েও এই টিউমার হতে পারে। এই ধরনের টিউমার হলে রোগী খুব ব্যথা অনুভব করে, তার হাত ও পায়ের কাজ করার ক্ষমতা কমে যায়, নড়াচড়া করতে অসুবিধা হয় এবং খুব ছোট খাট আঘাতেই টিউমার হওয়া হাড়টি ভেঙ্গে যেতে পারে, সেই সাথে রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রাও অনেক বেড়ে যেতে দেখা যায়।
হাড়ের এক্সরে করলে বোঝা যায় সেখানে এই টিউমার হয়েছে কিনা। সেকেন্ডারি টিউমার হলে শুধু এর চিকিৎসা করে কোনো লাভ নেই, প্রাইমারি টিউমারের চিকিৎসা করতে হয় সবচেয়ে আগে। এজন্য সবার আগে জানতে হয় কোন স্থানের ক্যান্সার থেকে অস্থিতে এই বীজ টি এসেছে। এজন্য স্তন, ফুসফুস, প্রস্টেট ইত্যাদি অঙ্গগুলোকে খুব ভালো করে পরীক্ষা করে দেখতে হয় সেখানে কোনো ক্যান্সার হয়েছে কিনা। এজন্য প্রয়োজন হলে বুক এবং পেটের সিটি স্ক্যান পরীক্ষা করাতে হয়। এভাবেও রোগের উৎস ধরা না গেলে বায়োপসি করে নিশ্চিত হতে হয় কোথা থেকে টিউমারটি এসেছে।
প্রাইমারি টিউমারের উৎস নিশ্চিত করতে পারলে প্রথমে তার চিকিৎসা শুরু করতে হয়, প্রাইমারি রোগ ভালো হলে অথবা নিয়ন্ত্রনে আসলে অস্থির টিউমারের চিকিৎসা শুরু করা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কেমোথেরাপি এবং রেডিওথেরাপি দিয়ে প্রাইমারি টিউমার ফেলে দেবার পরে অস্থির টিউমারটি কেটে ফেলে দেয়া হয় এবং সে স্থানে প্রস্থেসিস বসানো হয়। তবে এর প্রকৃত চিকিৎসা নির্ভর করে টিউমারটি কোন স্টেজে আছে তার উপর।
-susastho